রাত ও দিন আল্লাহ তাআলার বড় দুটি নেয়ামত। দিন আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান ও রাত বিশ্রামের উপযুক্ত। আবার রাতের ইবাদত মহান আল্লাহ অনেক পছন্দ করেন। মুমিন মুত্তাকিদের একটি বিশেষ গুণ হলো- তারা আরামের ঘুমের কিছু অংশ আল্লাহর ইবাদতের জন্য নির্ধারণ করেন।
নবী কারিম (স.) ও সাহাবায়ে কেরাম (রা.) থেকে শুরু করে যুগে যুগে আল্লাহর মকবুল বান্দারা পরকালীন উন্নতির জন্য শেষরাতের ইবাদতকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয় মুত্তাকিরা থাকবে জান্নাতসমূহে ও ঝর্ণাধারায়। গ্রহণ করবে যা তাদের পালনকর্তা তাদের দেবেন। নিশ্চয় ইতঃপূর্বে তারা ছিল সৎকর্মপরায়ণ। তারা রাতের সামান্য অংশেই নিদ্রা যেত। রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত।’ (সুরা জারিয়াত: ১৫-১৮)হজরত আবু হুরায়রাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, প্রতি রাত্রে শেষ তৃতীয়াংশে আমাদের মর্যাদাবান বারাকাতপূর্ণ রব দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং বলেন, ‘যে আমাকে ডাকবে আমি তার ডাকে সাড়া দেব। যে আমার নিকট কিছু প্রার্থনা করবে আমি তাকে তা দান করব। যে আমার নিকট মাফ চাইবে আমি তাকে মাফ করে দেব।’ মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, তারপর তিনি হাত বাড়িয়ে দেন এবং বলেন, কে আছে যে এমন সত্তাকে কর্জ দেবে যিনি ফকির নন, না অত্যাচারী এবং সকাল পর্যন্ত এ কথা বলতে থাকেন। (বুখারি; মুসলিম; মেশকাত: ১২২৩)উল্লেখ্য, তিনি কীভাবে নেমে আসেন তা অজ্ঞাত। বিষয়টি অদৃশ্য জ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত। যা শুধুমাত্র আল্লাহর ইলমে রয়েছে। অতএব হাদিসে যেভাবে এসেছে সেভাবেই বিশ্বাস করতে হবে মুমিনদের। (আকিদাতুস সালাফ, পৃ- ২৯)
তাই এ শব্দকে আমাদের নেমে আসার মতো মনে করার সুযোগ নেই। ফুকাহায়ে কেরামের মতে, নেমে আসাকে যেসব অর্থ করা যেতে পারে সেগুলো হলো- ১ আল্লাহর হুকুম নেমে আসে। ২ রহমাতের ফেরেশতাগণ নেমে আসেন। ৩ আল্লাহর রহমত নেমে আসে। ৪ আল্লাহ তাআলার তাজাল্লী নেমে আসে।আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে রাতে ঘুমের পাশাপাশি তাঁর ইবাদত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।